মেটা ১৪০ কোটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক (Meta) ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে এক বিশাল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মেটার দাবি অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যেই তারা ১৪০ কোটিরও বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ বা সীমিত করেছে।
এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য ছিল—নকল পরিচয়, বিভ্রান্তিকর তথ্য, স্প্যাম এবং স্বয়ংক্রিয় বট-নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিচালিত প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড রোধ করা।
মেটার তথ্যমতে, বর্তমানে ফেসবুকের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০০ কোটির গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে। অথচ কেবল গত বছরের শেষ তিন মাসেই প্রায় ১৪০ কোটি অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।
স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও মানব পর্যবেক্ষণেই সাফল্য
মেটা জানায়, তারা স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি এবং মানব পর্যবেক্ষণের সমন্বয়ে নিয়মিতভাবে ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত ও অপসারণে কাজ করে যাচ্ছে। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত ভুয়া প্রোফাইলের নতুন কৌশল তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
চিহ্নিত হওয়া অ্যাকাউন্টের বেশিরভাগই রিপোর্ট ছাড়াই
মেটার প্রতিবেদন অনুযায়ী,
● ১৪০ কোটি+ অ্যাকাউন্ট-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
● ৯৮.৯% অ্যাকাউন্টই রিপোর্ট ছাড়াই শনাক্ত
● বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা টিম কাজ করছে ২৪/৭ ভিত্তিতে
ভুয়া প্রোফাইল তৈরির নেপথ্যে
অনেক অ্যাকাউন্ট সরাসরি ফেসবুকের নীতিমালা লঙ্ঘনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। পাশাপাশি, এমন বহু প্রোফাইলও রয়েছে যেগুলো প্রকৃত ব্যক্তি নয় বরং ব্যবসা, প্রতিষ্ঠান কিংবা পোষা প্রাণীর নামে খোলা।
বিশেষ করে, স্প্যাম ছড়ানো, মিথ্যা তথ্য প্রচার, বট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভুয়া কার্যক্রম পরিচালনা এবং পরিচয় চুরি করে প্রভাব বিস্তারের মতো ঘটনাগুলোই অধিকাংশ ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হওয়ার মূল কারণ।
ভুয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে দীর্ঘদিনের যুদ্ধ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে বিশ্বে সর্বাধিক ব্যবহৃত হওয়া সত্ত্বেও, ভুয়া অ্যাকাউন্ট বরাবরই ফেসবুকের জন্য একটি বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
২০১৯ সাল থেকেই প্রতি প্রান্তিকে গড়ে এক বিলিয়নেরও বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছে মেটা। তবে ২০২৩ সালের পর থেকে ভুয়া প্রোফাইল শনাক্তের হার কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মেটার পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে—বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে এমন অ্যাকাউন্টে, যেগুলো স্প্যাম ছড়ানো, প্রতারণামূলক অর্থ উপার্জন এবং ব্যবহারকারীদের ক্ষতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়।
